বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র শুধু ছবির জিনিস নয়; এটি দেশের বৈচিত্র্য ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। মানচিত্রের প্রতিটি জেলার অবস্থান, প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহাসিক বিখ্যাত কিছু তুলে ধরে। বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জীবনধারা, ঐতিহ্য মানচিত্রে প্রতিফলিত হয়। শিক্ষার্থী ভ্রমণপ্রেমীসহ সবার জন্য বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র একটি অপরিহার্য আর্টিকেল। দেশের প্রতিটি অঞ্চলের অনন্যতা ও সম্পদ তুলে ধরতে এই মানচিত্রের গুরুত্ব অসীম। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র আমাদের জাতীয় গর্বের প্রতীক ও পরিচয় দেওয়ার একটি অন্যতম অংশ।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র ও নামের সম্পূর্ণ তালিকা এবং পোস্ট কোড

- আপডেট সময় : ১১:২৩:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৮৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র ও নামের সম্পূর্ণ তালিকা এবং পোস্ট কোড এই পোস্টের মাধ্যমে পাবেন. বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ও সীমানার পূর্ণাঙ্গ ম্যাপ Pdf Download. বাংলাদেশ, দক্ষিণ এশিয়ার একটি ছোট কিন্তু ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, প্রশাসনিকভাবে ৮টি বিভাগে বিভক্ত, যার মধ্যে রয়েছে ৬৪টি জেলা। এই জেলাগুলো বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস, ভূগোল এবং অর্থনীতির বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র শিক্ষার্থী, গবেষক, ভ্রমণকারী এবং সাধারণ মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র, এর গুরুত্ব এবং এর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করব।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র ও নামের সম্পূর্ণ তালিকা
বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা খুবই সুন্দরভাবে সাজানো। দেশটি আটটি বিভাগে বিভক্ত এবং প্রতিটি বিভাগে একাধিক জেলা রয়েছে। ৬৪টি জেলায় মোট ৪৯৫টি উপজেলা রয়েছে। প্রতিটি জেলার নিজস্ব জেলা প্রশাসক রয়েছেন যারা সেই এলাকার উন্নয়ন ও শাসনকাজ দেখাশোনা করেন।
Read More: বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ৫টি উপায়
প্রথম জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা ১৬৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সবচেয়ে শেষ জেলা ফেনী জেলা ১৯৮৪ সালের ৭ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আয়তনের দিক থেকে সবচেয়ে বড় জেলা রাঙ্গামাটি এবং সবচেয়ে ছোট জেলা নারায়ণগঞ্জ।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার তালিকা
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলার নিজস্ব ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিচে বিভাগ অনুযায়ী ৬৪ জেলার তালিকা দেওয়া হলো:
ঢাকা বিভাগ
- ঢাকা
- গাজীপুর
- নারায়ণগঞ্জ
- নরসিংদী
- মানিকগঞ্জ
- মুন্সিগঞ্জ
- ফরিদপুর
- রাজবাড়ী
- গোপালগঞ্জ
- মাদারীপুর
- শরীয়তপুর
- কিশোরগঞ্জ
- টাঙ্গাইল
চট্টগ্রাম বিভাগ
- চট্টগ্রাম
- কক্সবাজার
- রাঙামাটি
- বান্দরবান
- খাগড়াছড়ি
- ফেনী
- নোয়াখালী
- লক্ষ্মীপুর
- কুমিল্লা
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া
- চাঁদপুর
রাজশাহী বিভাগ
- রাজশাহী
- নাটোর
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ
- পাবনা
- সিরাজগঞ্জ
- বগুড়া
- জয়পুরহাট
- নওগাঁ
খুলনা বিভাগ
- খুলনা
- বাগেরহাট
- সাতক্ষীরা
- যশোর
- নড়াইল
- মাগুরা
- ঝিনাইদহ
- কুষ্টিয়া
- চুয়াডাঙ্গা
- মেহেরপুর
বরিশাল বিভাগ
- বরিশাল
- পটুয়াখালী
- ভোলা
- বরগুনা
- ঝালকাঠি
- পিরোজপুর
সিলেট বিভাগ
- সিলেট
- মৌলভীবাজার
- হবিগঞ্জ
- সুনামগঞ্জ
রংপুর বিভাগ
- রংপুর
- দিনাজপুর
- পঞ্চগড়
- ঠাকুরগাঁও
- লালমনিরহাট
- নীলফামারী
- গাইবান্ধা
- কুড়িগ্রাম
ময়মনসিংহ বিভাগ
- ময়মনসিংহ
- শেরপুর
- জামালপুর
- নেত্রকোনা
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্রের গুরুত্ব
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র শুধু ভৌগোলিক তথ্যই প্রদান করে না, বরং দেশের প্রশাসনিক কাঠামো, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বোঝাতেও সহায়ক। নিচে এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করা হলো:
১. শিক্ষাগত ব্যবহার
মানচিত্রটি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভূগোল পড়াশোনার সময় জেলাগুলোর অবস্থান, সীমানা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়। এটি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের একটি অংশ।
২. প্রশাসনিক ব্যবহার
সরকারি কর্মকর্তা, পরিকল্পনাবিদ এবং প্রশাসকরা উন্নয়ন প্রকল্প, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য মানচিত্র ব্যবহার করেন। এটি জেলাভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণে সহায়ক।
৩. ভ্রমণ ও পর্যটন
ভ্রমণকারীদের জন্য বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র একটি অপরিহার্য সরঞ্জাম। এটি পর্যটকদের জন্য গন্তব্য নির্ধারণ, রুট পরিকল্পনা এবং স্থানীয় আকর্ষণ সম্পর্কে জানতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত বা সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বন পরিদর্শনের জন্য মানচিত্র একটি নির্ভরযোগ্য গাইড।
৪. ব্যবসা ও বাণিজ্য
ব্যবসায়ীরা বাজার বিশ্লেষণ, পণ্য সরবরাহ এবং লজিস্টিক পরিকল্পনার জন্য জেলার মানচিত্র ব্যবহার করেন। এটি তাদের প্রতিটি জেলার অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং ভোক্তা আচরণ বুঝতে সহায়তা করে।
বাংলাদেশের মানচিত্র কোথায় পাবেন?
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া যায়। কিছু নির্ভরযোগ্য উৎস হলো:
- বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS): সরকারি ওয়েবসাইটে বিস্তারিত মানচিত্র পাওয়া যায়।
- গুগল ম্যাপস: ডিজিটাল মানচিত্রের জন্য জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: স্কুল ও কলেজে মুদ্রিত মানচিত্র পাওয়া যায়।
- অনলাইন মানচিত্র প্ল্যাটফর্ম: যেমন OpenStreetMap এবং Mapcarta।

কিভাবে মানচিত্র ব্যবহার করবেন?
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র ব্যবহার করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
- জেলার নাম শনাক্ত করুন: মানচিত্রে আপনার কাঙ্ক্ষিত জেলাটি খুঁজে বের করুন।
- সীমানা পরীক্ষা করুন: পার্শ্ববর্তী জেলা এবং নদী, রাস্তা বা অন্যান্য ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য দেখুন।
- ডিজিটাল টুল ব্যবহার করুন: গুগল ম্যাপস বা অন্যান্য অ্যাপ ব্যবহার করে জুম ইন/আউট করে বিস্তারিত দেখুন।
- তথ্য সংগ্রহ করুন: মানচিত্রের সাথে জেলার জনসংখ্যা, অর্থনীতি বা পর্যটন স্থান সম্পর্কে তথ্য যোগ করুন।
আধুনিক প্রযুক্তিতে জেলা মানচিত্র
আজকালের যুগে গুগল ম্যাপ, ডিজিটাল মানচিত্র এবং মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে সহজেই যেকোনো জেলার অবস্থান জানা যায়। কিন্তু তবুও কাগজের মানচিত্র পড়ার দক্ষতা আলাদা গুরুত্ব রাখে। এতে একসাথে সবকিছু দেখা যায় এবং সম্পূর্ণ চিত্র বোঝা যায়।
স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইয়ে যে মানচিত্র দেওয়া থাকে, তা থেকে শিক্ষার্থীরা সহজেই দেশের প্রশাসনিক বিভাজন সম্পর্কে ধারণা পায়। এটি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও উন্নয়ন
বাংলাদেশ সরকার প্রতিটি জেলার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রতিটি জেলায় ডিজিটাল সেবা, ইন্টারনেট সংযোগ এবং আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হচ্ছে।
পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল – এসব মেগা প্রকল্প বিভিন্ন জেলার মধ্যে যোগাযোগ আরো সহজ করেছে। ভবিষ্যতে বুলেট ট্রেন ও আধুনিক মহাসড়ক দিয়ে সব জেলা আরো ভালোভাবে সংযুক্ত হবে।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র নিয়ে শেষ কথা
উপসংহার
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র শুধু একটি ভৌগোলিক নথি নয়, এটি দেশের সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের একটি প্রতিচ্ছবি। শিক্ষা, প্রশাসন, ভ্রমণ বা ব্যবসার জন্য এই মানচিত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও জানতে চান বা কোনো নির্দিষ্ট জেলার বিষয়ে গবেষণা করতে চান, তাহলে এই মানচিত্র আপনার সেরা সঙ্গী হতে পারে।